রাইট ভ্রাতৃদ্বয়েরও ১০০০ বছর আগে যিনি মানুষকে আকাশে উড়বার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি আব্বাস ইবন ফিরনাস। একজন মুসলিম পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ এবং প্রকৌশলী। ইবন ফিরনাস আকাশে উড়ার জন্য একটি যন্ত্রের নমুনা তৈরি করেন এবং তাতে ভর দিয়ে উড়ে পরীক্ষাও করেন।৮৫২ খ্রীষ্টাব্দের দিকে ইবন ফিরনাস কাঠের ফ্রেমের সাথে মজবুত চাদর আটকিয়ে এক ধরণের উড়নযন্ত্র তৈরি করেন এবং কর্ডোভার একটি মসজিদের মিনার থেকে লাফিয়ে পড়েন। কিছুক্ষন উড়ার পর তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। তবুও তিনি ছেড়ে দেন না।এরপর তার বয়স যখন ৭০ বছর তখন তিনি সিল্ক এবং ইগল পাখির পালক দিয়ে আরেকটি উড়নযন্ত্র তৈরি করেন। এবার তিনি পাহাড় থেকে তা নিয়ে লাফিয়ে পড়েন এবং উল্লেখযোগ্য পরিমান সময় এবং দূরত্ব পর্যন্ত উড়তে সক্ষম হন। ল্যান্ড করার পরে তিনি বুঝতে পারেন যে তার যন্ত্রে একটি লেজ লাগাতে হবে। ঠিক পাখি যেমন তার লেজ দিয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে, তেমন।আব্বাস ইবন ফিরনাস একজন আন্দালুসি মুসলিম ছিলেন। তিনি জোতির্বিজ্ঞান চর্চায়ও অনেক অবদান রাখেন। তিনি বেশ কয়েকধরণের প্ল্যানিস্ফেয়ার (মহাকাশে গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি পরিমাপ করার যন্ত্র) আবিষ্কার করেন। ইবন ফিরনাস রিডিং স্টোন (কাচের তৈরি এক ধরণের লেন্স, যা দ্বারা ছোট লেখা বড় দেখা যায়) আবিষ্কার করেন। তার আবিষ্কৃত পদ্ধতি দ্বারা স্প্যানিশ মাইনে পাথর কাটা হতো। তিনি আল-মাকাতা নামে ওয়াটার ক্লক (পানির মাধ্যমে সময় দেখার যন্ত্র) ডিজাইন করেন। ইবন ফিরনাস ‘আরমেন ফারম্যান’ (Armen Firman) নামেও পরিচিত। বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার নামে নামকরণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা চাঁদের একটি গর্তের নাম তার নামে নামকরণ করেন। তথ্যসূত্র : Islamic History Institute, Wikipedia
Posted inইতিহাস