উমার (রাঃ) এর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়

উমার (রাঃ) এর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়

বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়ের জন্য জেরুযালেম আসছেন উমার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। সওয়ার হয়েছেন একটি ছাই রংয়ের উটের পিঠে। রাজা-বাদশাদের মত মাথায় ছিল না কোনো পাগড়ি। দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য চুলগুলো ছিল এলোমেলো আর উশকো-খুশকো। উটের ওপর বিছানো ছিল এক টুকরো পশমী কাপড় আর গাছের ছালের তৈরি বালিশ। যখন উটের পিঠে চড়তেন তখন সেগুলোকে বসার বিছানা এবং গদি হিসেবে ব্যবহার করতেন। ঘুমানোর সময় সেগুলোকেই বিছানা আর বালিশ বানিয়ে ঘুমাতেন৷

মুসলিম বিশ্বের খলীফা উমারের পরনে সেদিন ছিল তালি লাগানো এবং এক পাশ ছেড়া একটি জামা৷ উমার জামাটি সেলাই এবং পরিষ্কার করার জন্য সেখানকার লোকদের অনুরোধ করলেন। বললেন, তাড়াতাড়ি আমার জামাটি ধুয়ে সেলাইয়ের ব্যবস্থা করে দাও৷ ততক্ষণের জন্য আমাকে একটি জামা কিংবা কাপড় ধার দাও৷

তারা তাকে কাতানের তৈরি একটি জামা ধার দিলো। যখন উমারের জামা ধৌত করে, তালি লাগিয়ে তাঁর নিকট আনা হলো৷ সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাদের জামা ফেরত দিয়ে নিজের জামা পরিধান করলেন৷

সেখানকার গোত্রপ্রধান জালমুস বললেন, আপনি আরবের রাজা, এই দেশে এই পরিবেশে উটের পিঠে চড়ার প্রচলন নেই৷ আপনি যদি এই জামা ছেড়ে অন্য কোন জামা পরিধান করতেন এবং উট ছেড়ে খচ্চরে চড়তেন তাতে রোমানদের মধ্যে আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রভাব বৃদ্ধি পেত৷ উত্তরে খলীফা বললেন, আমরা এমন একটি সম্প্রদায় যাদের আল্লাহ তা‘আলা ইসলামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন৷ আল্লাহর পরিবর্তে আমরা অন্য কিছু চাই না৷

সেনাপতি আবু উবায়দাও বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এই নগরবাসীর সম্মুখে আপনি যা করেছেন তা বড় বেমানান বটে৷
উমার তখন আবু উবায়দার বুকে মৃদু আঘাত করে বললেন, হে আবু উবায়দা! এমন মন্তব্য আপনি ছাড়া অন্য কারো মুখে হয়তো বা মানায়৷ এক সময় আপনারা হেয়, তুচ্ছ, লাঞ্ছিত ও নগণ্য সংখ্যক লোক ছিলেন৷ তারপর ইসলামের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আপনাদেরকে সম্মানিত করেছেন৷ এরপর যদি আল্লাহর পথ ব্যতীত অন্য কোন পথে ইজ্জত ও সম্মান লাভের চেষ্টা করেন তবে আল্লাহ আপনাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন৷
[আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া]

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *