১৭ হিজরির শেষের দিকে মদিনায় একবার ব্যপক খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সময়টা উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাসনকাল। বৃষ্টিহীনতার কারণে সেবার কোন ফসল ফলেনি।
দূর্ভিক্ষের এ দিনগুলোতে একদিন উমারের কাছে একবার মাখন মাখানো রুটি নিয়ে আসা হল। উমার খেতে বসলেন এক বেদুঈনের সাথে। বেদুঈন রুটির বড় বড় টুকরোগুলো মূর্তেই সাবাড় করে দিল। উমার বললেন, তুমি দেখছি বড় বড় লুকমায় সব রুটি মুহূর্তেই সাবাড় করে ফেলছ। বেদুইন বলল, বহুদিন হলো তেল আর মাখন চোখে পড়ে না। অনেক দিন ধরে কাউকে এসব খাবার খেতেও দেখি না। এ ঘটনার পর উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু শপথ করেন, যতদিন না মানুষের এই দুর্দশার পরিবর্তন হচ্ছে ততদিন কোনো মাখন বা মাংস তিনি স্পর্শ করবেন না।
তিনি সন্ধ্যায় শুধু তেল মাখানো রুটি খেয়েই খাবার সারতেন। এভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে থাকতে থাকতে তাঁর শরীরের রং পর্যন্ত ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল।
একবার একটি উট জবাই করে মানুষকে খাওয়ানো হল। উমারের সামনে উটের কুঁজ আর কলিজার মাংস আনা হল। উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন এগুলো কীসের? সবাই বলল, হে আমিরুল মুমিনিন, আজ যে উট জবাই হয়েছে সেই উটের মাংস।
একথা শুনে তিনি বললেন, উঠিয়ে নাও, সরিয়ে নাও! আমি খাব নরম গোশত ও কলিজা আর মানুষ খাবে হাড্ডি, তা কখনো হবে না! এ খাবার সরিয়ে সাধারণ খাবার নিয়ে এসো আমার জন্য। এরপর রুটি আর তেল আনা হলে তিনি রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে তেলের সঙ্গে মাখিয়ে খেয়ে নেন।
এরপর বললেন হে ইয়ারফা, এই খাবার তুমি ছামাগ (মদিনার নিকবর্তী এক স্থানের নাম) গ্রামে থাকা আমার পরিবারের লোকদের দিয়ে এসো। তিন দিন হলো তাদের জন্য আমি কোনো খাবার পাঠাতে পারিনি। মনে হয় তারা এবার পেট ভরে খেতে পারবে।
সূত্র : মুসলিম জাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে ; ড. রাগিব সারজানি।