জ্ঞান পাওয়ার পর অজ্ঞতার দিকে আর সত্যকে জানার পর ধ্বংসের দিকে ফিরে যেও না। সঠিক পথ পাওয়ার পর তা ছেড়ে দিও না।
দুনিয়াপ্রেমী মানুষদের দুনিয়া পাবার সংগ্রাম দেখে প্রভাবিত হয়ো না। কিয়ামতের দিন তাদের এই সংগ্রাম শাস্তি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। নিশ্চয় কবরই বিপদ, যা তোমার থেকে মাত্র এক হাত দূরে।
আত্ননিয়োগ করো শুধুই আখিরাতের জন্য, নিজের অন্তরে অন্যকিছুকে জায়গা দিও না। অত:পর কঠোর পরিশ্রমে লিপ্ত হও। দুনিয়ার প্রলোভন থেকে বেঁচে থাকো। ইবাদতেকে সাথী করে আখিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দাও। আমি সেই উপদেশই তোমাকে দিচ্ছি যা আমি নিজেকেও দিই।
মনে রাখবে, সফলতা আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। যদি তাঁর সাহায্য পেতে চাও তাহলে বেশি বেশি দোআ, সালাত, তাওবাহর মাধ্যমে তাঁর প্রতি পরিপূর্ণ আত্নসমর্পণ করো। তোমার দিন-রাত্রিগুলো গণনা করা হচ্ছে অতএব সময়কে বুদ্ধিমানের ন্যায় কাজে লাগাও। আল্লাহর হক্ব আদায়ের প্রতি আন্তরিক হও।
আল্লাহ যেন আমাদেরকে নিজেদের উপর সোপর্দ না করেন। তিনি যেভাবে তাঁর প্রিয় দাসদের অভিভাবক ও সাহায্যকারী হয়েছেন তেমনিভাবে আমাদেরও অভিভাবক ও সাহায্যকারী হয়ে যান।
যা তোমার আমলকে ধ্বংস করে দিতে পারে তা থেকে সাবধানে থাকো। মানুষকে দেখানো উদ্দেশ্যে আমল করা আর অহংকার – এ দুটো থেকে বেচে থাকো। কেননা এ দুটো তোমার আমলকে ধ্বংস করে দিবে। তুমি যদি মনে করো তোমার অমুক ভাইয়ের চেয়ে তুমি উত্তম তাহলে তুমি অহংকার করলে। বাস্তবে সে তোমার থেকেও অধিক আমলকারী হতে পারে অথবা তোমার নিয়তের চাইতে তার নিয়ত আরও বেশি নিষ্ঠাপূর্ণ হতে পারে।
নিজের ইমানের দরুন মানুষের নিকট থেকে প্রশংসা কিংবা সম্মানের আশা করো না। ইমানের বিনিময়ে মানুষের নিকট থেকে ব্যক্তিগত সাহায্যের আশা করো না।
যদি আল্লাহর জন্য তোমার সবকিছু হয়ে থাকে তাহলে তা প্রমান করতে ব্যস্ত হয়ে যাও। দুনিয়াবিমুখ হয়ে আখিরাতকে পেতে চাইলে বার বার মৃত্যুকে স্মরণ করো।
মনে রাখবে, আল্লাহকে ভয় না করে পাপাচারে লিপ্ত হলে কখনই তুমি দুনিয়াকে ছাড়তে পারবে না। বিচারের দিন সেই ব্যক্তির দশা খুব করুণ হবে যে জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও আমল করেনি।
সুফিয়ান আস-সাওরী রহিমাহুল্লাহর উপদেশ।
সূত্র : সুফিয়ান আস সাওরী রহিমাহুল্লাহ এর জীবনী : ১৮১-১৮২