দুইজন লোক দাউদ আলাইহিস সালামের কাছে আসল বিচারের জন্য। তাদের একজন ছিল ছাগলপালের মালিক ও অপরজন শস্যক্ষেত্রের মালিক। শস্যক্ষেত্রের মালিক ছাগলপালের মালিকের বিরুদ্ধে দাবী করল যে, তার ছাগপাল রাত্রিকালে আমার শস্যক্ষেত্রে ঢুকে সম্পূর্ণ ফসল বিনষ্ট করে দিয়েছে; কিছুই অবশিষ্ট রাখেনি।
সে এর বিচার চাইল দাউদ আলাইহিস সালামের কাছে। যেহেতু ক্ষতিগ্রস্থ ফসল আর ছাগপালের মূল্য সমান ছিল এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিও দোষ স্বীকার করে নিয়েছিল তাই দাউদ আলাইহিস সালাম রায় দিলেন– ছাগলপালের মালিক তার সমস্ত ছাগল শস্যক্ষেত্রের মালিককে অৰ্পন করবে।
অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দুজনেই রায় পেয়ে আদালত থেকে বের হয় আসছিল। বের হওয়ার পথে দেখা হলো সুলাইমান আলাইহিস সালামে সাথে। তিনি ছিলেন দাউদ আলাইহিস সালামের পুত্র। সুলায়মান তাদেরকে প্রাপ্ত রায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তারা তা শুনিয়ে দিল।
তখন সুলাইমান বললেন, আমি রায় দিলে তা ভিন্নরূপ হত এবং উভয়পক্ষের জন্য উপকারী হত। তারপর তিনি পিতা দাউদের কাছে উপস্থিত হয়ে তাকে এ কথা জানালেন। দাউদ আলাইহিস সালাম শুনতে চাইলেন তাঁর রায়। তখন সুলায়মান বললেন– আপনি ছাগপাল শস্যক্ষেত্রের মালিককে দিয়ে দিন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। সে এগুলোর দুধ, পশম বিক্রি করুক। আর শস্যক্ষেতটি অর্পণ করুন ছাগলপালের মালিককে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। সে তাতে চাষাবাদ করে শস্য উৎপন্ন করুক। যখন শস্যক্ষেত্ৰ ছাগলপালে বিনষ্ট করার পূর্বের অবস্থায় পৌঁছে যাবে তখন শস্যক্ষেত্র উহার মালিককে এবং ছাগপাল ছাগলের মালিককে প্রত্যাৰ্পণ করুন। দাউদ আলাইহিস সালাম এই রায় পছন্দ করলেন এবং পুত্রের রায়ই কার্যকর করলেন।
বিচারের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দু’জন নবী দুইরকম রায় দিলেন। তারপরও তারা দুজনেই ছিলেন ন্যায় বিচারক। কেউ কারোর রায়কে ভুল বললেন না। এবং অপেক্ষাকৃত উত্তম রায়কে মেনে নিতেও আপত্তি করলেন না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বললেন, “তাদের প্রত্যেককে আমরা দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান” অর্থাৎ রায় ভিন্নরকম হওয়া স্বত্তেও আল্লাহ তাদের দুজনকেই সমর্থন করলেন। যেহেতু সুলায়মানের রায় অধিক উত্তম এবং কার্যকর হয়েছে তাই তিনি শুধুমাত্র সুলায়মানের প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান জ্ঞানের তারিফ করলেন না। বরং তিনি ‘প্রত্যেককে দিয়েছিলাম – كُلًّا ءَاتَيْنَا’ শব্দটি ব্যবহার করলেন।
সূত্র : সূরা আম্বিয়ার ৭৮-৭৯ আয়াতের তাফসীর।