আমার মুসলিম ভাই

আমার মুসলিম ভাই

মুসলিম ভ্রাতৃত্বের ধারণাটা আমাদের বর্তমান সময়ের মুসলিমদের মধ্যে পরিষ্কার না। যদিও ‘মুসলিম ভ্রাতৃত্ব’ কথাটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত তবুও আমাদের আচরণে ভ্রাতৃত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় না।

সাহাবীগণ এই ব্যাপারটা সঠিকভাবে বুঝেছিলেন। তাই তাদের জীবনের দিকে তাকালে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ‘মুসলিম ভ্রাতৃত্বের’ উদাহরণ দেখতে পাই :

মদিনায় হিজরতের পর আনসার এবং মুহাজির সাহাবীদের মধ্যে রাসূল ﷺ ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করে দিয়েছিলেন। আবদুর রাহমান ইবনু আওফ এর ভ্রাতৃত্ব হয় সা’দ ইবনু রাবীর সাথে। রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা।

১.
সা’দ ইবনু রাবী আব্দুর রহমানকে বললেন, আমি আনসারদের মাঝে অধিক ধন-সম্পত্তির অধিকারী। আমার অর্ধেক সম্পত্তি আপনাকে দিচ্ছি এবং আমার উভয় স্ত্রীর মধ্যে যাকে আপনার পছন্দ হয়, তাকে আমি তালাক দেব। যখন সে ইদ্দত পূর্ণ করবে, তখন আপনি তাকে বিয়ে করে নেবেন।

আব্দুর রহমান বললেন, আল্লাহ পাক আপনার সম্পদ ও পরিবারে বরকত দান করুন। আপনার সবকিছু আপনার কাছেই থাক। আমাকে শুধু বাজারের রাস্তাটা দেখিয়ে দিন। আমি ব্যবসা করতে চাই। সা‘দ বিন রাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাকে বনু কায়নুকার বাজার দেখিয়ে দিলেন। তিনি সেখানে গিয়ে বেচা-কেনা শুরু করলেন। [বুখারি]

২.
আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, মুহাজিরগণ নবি ﷺ এর নিকট আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যে ভাইদের নিকট আমরা আশ্রয় গ্রহণ করেছি তাদের চেয়ে উত্তম মানুষ আর দেখিনি। তারা সামান্য বিষয়েও আমাদের প্রতি সহানুভূতি দেখায় এবং আমাদের জন্য প্রচুর সম্পদ বিসর্জন দেয়। আমরা শুধু তাদের বাগান ও জমির কাজে সহযোগিতা করি। এতেই তারা আমাদেরকে ফসলের সমান ভাগ দেয়। আমরা আশংকা করছি, তারাই (আখেরাতের) সমস্ত প্রতিদান নিয়ে যাবে। নবি ﷺ বললেন, না। যতক্ষণ তোমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এবং তাদের জন্য দুআ করবে। (তোমরাও প্রতিদান পাবে।) [মুসনাদে আহমাদ, সুনানে নাসাঈ]

৩.
আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরেক বর্ণনায় এসেছে, (বাহরাইন বিজিত হওয়ার পর) নবি ﷺ সমস্ত যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আনসার সাহাবীদের নামে লিখে দিতে চাইলেন। তারা এ প্রস্তাবে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেন। আর আবেদন জানালেন, আমাদেরকে যে পরিমাণ সম্পদ দেয়া হবে মুহাজির ভাইদেরও যেন সেই পরিমাণই দেয়া হয়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, যদি তোমরা (মুহাজিরদেরকে রেখে কোনো কিছু) নিতে সম্মত না হও তাহলে ধৈর্যধারণ করতে থাকো হাউজে কাউসারের নিকট আমার সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত। [সহীহ বুখারী]

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *