ইমাম আবূ হানীফা রহিমাহুল্লাহ ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যে তাবেয়ীদেরকে খুঁজে বের করতেন, বিশেষ করে সেসব তাবেয়ীদের যারা সাহাবীদের সান্নিধ্যে থেকে ফিকহ শাস্ত্র এবং ইজতিহাদের জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘উমার, ইবনে মাসউদ ও ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমের ছাত্রদের কাছ থেকে আমি তাদের ফিকহী জ্ঞান গ্রহণ করেছি।”

ফিকহের জ্ঞান অর্জনের আগে আবূ হানীফা (রহ.) কুরআনুল কারীম মুখস্থ করেন। হাদীস অধ্যয়ন, আরবী ব্যাকরণ, সাহিত্য ও কাব্যের উপরেও তিনি প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করেন।

গভীরভাবে পড়াশুনার জন্য তিনি ফিকহশাস্ত্রকে কেন বেছে নিয়েছেন সে সম্পর্কে তাঁর একটি চমৎকার উক্তি রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি এ ইলম নিয়ে যতবেশী পড়াশুনা করি এর মর্যাদা ততবেশী স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে… আর আমি দেখতে পাচ্ছি- এ জ্ঞান ছাড়া ফরয ইবাদত আদায় করা সম্ভব নয়, ইসলাম কায়েম করা সম্ভব নয়, ইবাদত-বন্দেগী করা সম্ভব নয়। এমনকি এই জ্ঞান ছাড়া দুনিয়া-আখিরাত কোনোটাই পাওয়া সম্ভব নয়।”

বেশি বেশি হজ্জে আসা ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) এর অভ্যাস ছিল। হজ্জের সুবাদে তিনি মক্কা, মদিনার অনেক ফকীহ-মুহাদ্দিসদের নিকট হাদিস গ্রহণ করতেন এবং ফিকহ নিয়ে আলোচনা করতেন। এভাবে তিনি সে যামানার বড় বড় আলেমদের সান্নিধ্যে থেকে ‘ফতোয়া’ নিয়ে গবেষণাকর্ম চালিয়েছেন।

২২ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি তাঁর ওস্তাদ হাম্মাদ ইবন আবু সুলাইমান (রহ.) এর সান্নিধ্যে থাকেন। উস্তায মারা গেলে তিনি কূফার মসজিদে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তাঁর কাছে যেসব ‘ফতোয়া’ ও ‘বিচার’ আসত তিনি ছাত্রদের কাছে সেসব মাসআলার বিশ্লেষণপূর্ণ সমাধান করতেন। তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও যুক্তির আলোকে প্রত্যেকটি মাসআলাকে তাঁর সাদৃশ্যপূর্ণ অন্য মাসআলার সাথে তুলনা করতেন। এভাবেই তিনি ফিকহ শাস্ত্রের বিধি-বিধান নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি দাঁড় করাতে সক্ষম হন। এভাবেই তিনি আবূ হানীফা (রহ.) বিশ্বব্যাপি ইমাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *