উহুদের যুদ্ধে মুসলিমরা যখন প্রায় বিজয় অর্জন করে ফেলেছেন ঠিক তখনই তীরন্দাজদের একটি ভুলের কারণে নেমে আসে মারাত্নক বিপর্যয়। শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির। শত্রুবাহিনী রাসূল ﷺ এর একেবারে কাছে চলে আসে। সেসময় রাসূল ﷺ এর পাশে ছিল হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন সাহাবী।

সেসময় নুসাইবাহ বিনতে কাব অন্যান্য মহিলা সাহাবীর সাথে সৈন্যদের জন্য পানির মশক প্রস্তুত করছিলেন। হঠাৎ শুনতে পেলেন মুসলিমরা পরাজিত হতে যাচ্ছে এবং শত্রুদল রাসূল ﷺ কে আক্রমণ করেছে। তিনি এক মহূর্তও দেরী করলেন না। ফেলে দিলেন তাঁর কাঁধ থেকে পানির মশক। তুলে নিলেন এক হাতে ঢাল অন্য হাতে তরবারী। ঝাঁপিয়ে পড়লেন শত্রুদলের মধ্যে। লিপ্ত হলেন ভীষণ যুদ্ধে। অজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ করতে থাকলেন।

তাঁর যুদ্ধের ক্ষীপ্রতা এতটাই বেশি ছিল যে স্বয়ং রাসূল ﷺ বলেছেন, আমি যেদিকে তাকাচ্ছিলাম সেদিকেই নুসাইবাহকে দেখছিলাম সে আমাকে রক্ষার জন্য যুদ্ধ করছে!

যখন তাঁর জ্ঞান ফিরল তখন তিনি সর্বপ্রথম রাসূল ﷺ এর ব্যাপারে জানতে চান (যে তিনি সুস্থ আছেন কিনা)।

নুসাইবাহ বিনতে কাব ছিলেন আনসারী মহিলা সাহাবী। তিনি উম্মে ‘উমারাহ নামেও পরিচিত। দ্বিতীয় আকাবায় তিনি তাঁর পরিবারসহ ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পরপরই নুসাইবাহ নিজেকে শিক্ষা এবং প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ইসলামের জন্য প্রস্তুত করে নেন। ধনুর্বিদ্যা, ঘোড়সওয়ার তরবারী চালনাসহ বিভিন্ন যুদ্ধকৌশলে পারদর্শী ছিলেন তিনি। উহুদ যুদ্ধ ছাড়াও খায়বার, হুনাইন, ইয়ামামার যুদ্ধে নুসাইবাহ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : Great Women of Islam; Darussalam, আর-রাহীকুল মাখতুম।

One Reply to “ইসলামের প্রথম নারীযোদ্ধা”

Leave a Reply to Samama Begum Chhabi Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *